সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়েছিল গত ১ জুলাই থেকে। অহিংস এই আন্দোলন সহিংস হয় ১৫ জুলাই থেকে। পরে তা গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। একসময় দেশ ছেড়ে পালান স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। উত্তাল সেই ৩৬ দিন দেশজুড়ে যা যা ঘটেছিল:
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। বেলা পৌনে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল করে নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাব ও বাটা সিগন্যাল মোড় ঘুরে শাহবাগে গিয়ে থামে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
এই দিন আন্দোলনকারীরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দেড় ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন। একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন এবং সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন।
সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগে স্থগিত হয়নি। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ‘নট টুডে’ বলে আদেশ দেন। শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধ করেন। আন্দোলন আরও জোরালো হচ্ছে। এবার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক।
ছুটির দিন শুক্রবারও বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। চট্টগ্রাম, খুলনা ও গোপালগঞ্জে সড়ক অবরোধ।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের দিনের মতোই বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ছাত্রধর্মঘট এবং সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের ডাক দেন। এর নাম দেওয়া হয় ‘বাংলা ব্লকেড’।
বাংলা ব্লকেডে স্থবির রাজধানী। অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা।
রাজধানী ঢাকার ১১টি স্থানে অবরোধ, ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, ৩টি স্থানে রেলপথ অবরোধ এবং ৬টি মহাসড়ক অবরোধ। সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে সংসদে আইন পাসের দাবি।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আগামীকাল ১০ জুলাই সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’র ডাক। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থীর আবেদন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা চার ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা ‘বাংলা ব্লকেড’র কারণে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। সারা দেশে কার্যত অচল হয়ে পড়ে সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ। অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন অন্তত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পুলিশের বাধা ও হামলার মধ্যে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কোথাও কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লায় ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, শিক্ষার্থীরা ‘লিমিট ক্রস’ করে যাচ্ছেন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার ছুটির দিনেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা। পরের দিন রোববার গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতি বরাবর এ স্মারকলিপি দেবেন আন্দোলনকারীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ‘কোটা বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।’ শেখ হাসিনা আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে?’ একই দিনে পদযাত্রা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডের কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় ছাত্রলীগের নাম এসেছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাঁরা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের শেষ দেখিয়ে ছাড়বেন বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের বুলেটে নিহত। সারা দেশে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ। বিকেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আন্দোলন যাবে, আন্দোলন আসবে। কিন্তু ছাত্রলীগ থাকবে। সবকিছুই মনে রাখা হবে এবং জবাব দেওয়া হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিতাড়ন করে ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা। ছুটির দিনেও ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রবিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল সারা দেশ। বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও গুলি, নিহত ২৭। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশ ছিল প্রায় অচল। সারা দেশে বিজিবি মোতায়েন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকা ছিল কার্যত অচল, পরিস্থিতি ছিল থমথমে। রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি, সেনাবাহিনী মোতায়েন। ইন্টারনেট–সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে শুক্রবার রাতে আট দফা দাবি পেশ। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের গণমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে ৯ দফার ঘোষণা দেন।
দেশজুড়ে কারফিউ, সেনা মোতায়েন। সাধারণ ছুটি ঘোষণা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া ও গুলি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন তাঁর মা। তিনি জানান, আগের দিন শুক্রবার দিবাগত রাতে (১৯ জুলাই) দুইটার দিকে তাঁকে তুলে নেওয়া হয়।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের রায়—কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। টানা প্রায় তিন দিন ধরে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে মানুষ।
সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এ ব্যবস্থা রেখে রাতে প্রজ্ঞাপন অনুমোদন। ৫ দিন পর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা সেনাবাহিনী–পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
কোটাপ্রথা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি। রাতে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট–সেবা চালু। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদকে ১৮ জুলাই থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মেট্রোস্টেশন পরিদর্শন। বললেন, ‘আমি জনগণের কাছে বিচার চাইছি।’
এলাকা ভাগ করে চলছে ‘ব্লক রেইড’। সারা দেশে অভিযান। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলা। নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাঁরা হলেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। ১১ দিনে গ্রেপ্তার ৯ হাজার ১২১ জন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিবির হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। মোবাইল ইন্টারনেট ১০ দিন পর সচল।
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ১৪ দলের বৈঠকে। ৬ সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে। ‘জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না’—এক শুনানিতে এ মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিল। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিবৃতি, স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল লাল রঙের ফ্রেমে রাঙিয়েছেন অনেকে। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের।
‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির পর বৃহস্পতিবারের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। ১৪ দিন পর ফেসবুক চালু।
ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেলা দেড়টার একটু পরেই তাঁরা ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের একটি গাড়িতে বেরিয়ে আসেন। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুমার নামাজের পর ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালিত হয়। ২৮ জেলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের ‘দ্রোহযাত্রা’ কর্মসূচি পালন। শিল্পীসমাজের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদে শামিল হন সর্বস্তরের মানুষ। ৬ সমন্বয়ক বললেন, আন্দোলন প্রত্যাহারের সেই ঘোষণা স্বেচ্ছায় ছিল না।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েত হন শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাজধানীসহ দেশের ৩৩টি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ।
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে সারা দেশে ১৮ জেলায় ব্যাপক সংঘাতের খবর। সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ নিহত।
পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালালেন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা। গণভবন, সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে অসংখ্য মানুষ। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন, আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আগুন।
দিনের আন্দোলন
জনের মৃত্যু*
জনের মৃত্যু ঢাকায়*
শিশু–কিশোরের মৃত্যু*
জন আহত*
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে অহিংস আন্দোলন থেকে জুলাই-অগাস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে রূপ নেয়া থেকে ৫ অগাস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া পর্যন্ত ঘটে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, প্রেক্ষাপট, মুহূর্তগুলোর পাশাপাশি ঢাকা সহ সারাদেশে ছাত্র-জনতার তৈরি করা অসাধারণ সব দেয়াল লিখন, ছবি, কার্টুন আর গ্রাফিতি ক্যামেরাবন্দী করেছেন প্রথম আলোর দায়িত্বশীল আলোকচিত্রী দল।
প্রথম আলো ফটো জার্নাল | জুলাই অগাস্ট ২০২৪
সাজ্জাদ শরিফ (সম্পাদক)
ড. আল মাসুদ হাসানউজ্জামান
আলতাফ পারভেজ
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া
আলী রীয়াজ
আসিফ নজরুল